এনামুল হক এনাম, জকিগঞ্জ
সিলেটের জকিগঞ্জে ভূতুড়ে বিদ্যুৎ বিলে গ্রাহক হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। একদিকে ঘনঘন লোডশেডিং অপরদিকে দ্বিগুণ তিনগুণ বিলে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন সাধারণ গ্রাহক। অনেক এলাকাতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ থাকে না। দিনের পর দিন চলছে বিদ্যুৎ অফিসের এই অরাজকতা। এতে জনগণের লাখ লাখ টাকা গচ্ছা যাচ্ছে কিন্তু দেখার যেন কেউ নেই। প্রতিদিন অসংখ্য গ্রাহক বিল বাড়ানোর অভিযোগ নিয়ে অফিসে যাচ্ছেন। অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্মচারীরা নিজেদের মতো করে গ্রাহককে বোঝাচ্ছেন। এতে বুঝলে ভালো না বুঝলে তাদের কিছু করার নেই বলে বিদায় করে দিচ্ছেন। এছাড়া টাকা দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ আনতে গেলে গ্রাহকদের হয়রানির শেষ নেই। এ নিয়ে প্রায় প্রতিদিন গ্রাহকের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়াচ্ছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গ্রাহক বলেন দীর্ঘ ৬ মাস ধরে বিদ্যুৎ অফিসে আসা-যাওয়া করছি কিন্তু বিদ্যুৎ সংযোগ পাচ্ছি না। তবে কোন কারণে সংযোগ দিবেন না তা কর্তৃপক্ষ বলতে নারাজ।
এনামুল হক এনাম নামে এক গ্রাহক বলেন, বিগত কয়েক বছর হয়েছে পল্লী বিদুৎ সংযোগ পেয়েছি। পরিবারের ৩ জন সদস্য ২টি ১৫ ওয়াটের এলইডি লাইট ও ২টি ছোট খাচা ফ্যান ব্যবহার করি। ঠিকমতো বিদ্যুৎ থাকে। পূর্বে বিল আসতো ১০০ থেকে ১৫০ টাকার মতো। গত কয়েকমাস থেকে মাসে বিল ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। বিল না দিলে সংযোগ কেটে মোকদ্দমায় জড়ানোর হুমকি দেওয়া হয়। অফিসে বেশ কয়েকবার গিয়েও এর সমাধান হয়নি। তাছাড়া গতকাল রোববার আমি এলাকার বাড়িতে ছিলাম না আমার ঘরে আমার বয়োবৃদ্ধ মা, স্ত্রী ও সন্তানরা ছিল ওরা আমার মাকে হুমকি-ধামকি প্রদর্শন করে বিদ্যুৎ লাইন কেটে দেয়। এতে করে আমার সন্তানেরা পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটছে।
অফিসে গিয়ে বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দেখা গেছে, প্রতিদিন ৮/১০ জন গ্রাহক এসব ভূতুরে বিল নিয়ে অফিস মুখি হয়ে নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। ভূতুরে বিল পরিশোধ করতে কেউ জমি বন্ধক দিচ্ছেন আবার কেউবা বিক্রয় করছেন।
এক সরকারি কর্মচারী বলেন, বিদ্যুৎ বিল বেশি আসায় বিল পরিশোধ করার পর ছেলে-মেয়ের স্কুলের বেতন এবং হাট-বাজার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন।
স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, মিটার ত্রুটি বিষয়ে বার বার অফিসকে অবগত করেও তার সমাধান মেলেনি।
জকিগঞ্জ জোনাল অফিসের ডিজিএম প্রকৌশলী মো. মোতাক্কিম বিল্লা জানান, গ্রাহকের মিটার বিল কত আসলো সেটি দেখার বিষয় তার না। বিল বকেয় হলে আমি লাইন কাটব । আজ আমি ৯৫টি বাড়ির বিদুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছি।
তিনি আরো জানান, বিল যা আসে তা পরিশোধ করতে হবে। কোনো প্রকার সুপারিশ ও মানবিক বিবেচনা করা হবে না। যোগদানের পর থেকে বিল সংশোধন করা বন্ধ করে দিয়েছেন। কারও জন্য আমাদের তৈরি করা সিস্টেম বদলাতে পারব না।
তাছাড়া এক পর্যায়ে প্রতিবেদকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বিভিন্ন টালবাহানা শুরু করেন। লাইন কাটতে গিয়ে ভোক্তভোগীদের হুমকি প্রদর্শন করেছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাব দিতে তিন রাজি হননি। একপর্যায়ে তিনি প্রতিবেদকের প্রশ্নের উত্তর দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজার (চঃ দাঃ) মোহাম্মদ আবদুন নূর বলেন , আমি এ সম্পর্কে অবগত নই । আমি জকিগঞ্জে জোনাল অফিসে এ ব্যাপারে কথা বলব।
Leave a Reply